Friday, December 12, 2014

ফোন নাম্বার

ডিসেম্বর, ২০১৪
============

একটা সময় ছিলো যখন একটা নির্দিষ্ট ফোন নাম্বার সবসময়ই কল লিস্টের প্রথমেই থাকতো। নাম্বারটা খুজতে কন্টাক্ট লিস্টে বা ফোন বুকে যাওয়ার প্রয়োজন ছিলো না। সেই একই নাম্বার একটা সময় চলে যায় Yesterday তে। তারপর চলে যায় আরো পেছনের তারিখে। এভাবে একটা সময় আর ডায়াল, রিসিভ বা মিসড কল লিস্টেও নাম্বারটা থাকে না। নাম্বার টা কন্টাক্ট বা ফোন বুকে ঘুমিয়ে থাকে।

হঠাৎ হঠাৎ নাম্বারটা তে কল দিতে ইচ্ছে করে। যে নাম্বারটা অচেতন অবস্থায়ও কখনও ভুল হতো না সেই নাম্বারের শেষের বা মাঝের এক-দুইটা সংখ্যা মনেই পড়ছে না। আজব!!

খুঁজে বের করে কল দিবো-কি দিবো না, এই নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্বে কিছুক্ষণ সময় পার করে "না থাক" এটা বলে আর কল দেওয়া হয় না। তারপর একটা সময় আসে যখন হঠাৎ আর কল দিতেও ইচ্ছে করেনা। স্মৃতি তে ধুলো জমে, ঝাপসা হয়ে যায় সব অতীত। তারও অনেক পরে একটা সময় আসে যখন দেখা যায় সেই নাম্বারটা খুঁজেই পাওয়া যায় না, হয়তো নতুন হ্যান্ডসেটে এই নাম্বারটি আর কপি করে নেয়াই হয় নি।

কোন এক সন্ধ্যায় হঠাৎ মন খারাপ হয়ে যায়, হয়তোবা সেদিন একটু একটু বৃষ্টি পড়ে, একঘেয়েমি ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি। বুকের মধ্যে হঠাৎ মোচড় দিয়ে উঠে, একটা হাহাকার জেগে উঠে। নাম্বারটা যে মানুষটার তার ছবি মনে ভেসে উঠে। আচ্ছা, মানুষটা এখন কোথায় আছে? কেমন আছে? হাত বাড়ালেই যাকে ছোঁয়া যেত, চোখ মেললেই যাকে দেখা যেত, সে এখন যোজন যোজন দূরে। তার চেহারাও ভালো করে মনে পড়ে না আজ। অনেক চেষ্টা করে তার আবছা ঘোলা একটা চেহারা মস্তিষ্কে  দাড় করাই।

জীবনের ঘাত প্রতিঘাতে বাস্তবতাকে আমরা অস্বীকার করতে পারিনা। তবুও শত অধিকারের অভিমান বুকে চেপে আমরা বেঁচে থাকি। এভাবেই একদিন সব লেনদেন শেষ করে হারিয়ে যাই বিষন্ন মেঘমালার ভীড়ে ভালো থাকুক হারিয়ে যাওয়া প্রিয় মানুষটা।

Tuesday, December 2, 2014

How you want her to be?

December, 2014
============

Not every man wants to be in a relationship. Some just want good company, a girl to vibe with, converse with & laugh with. Not in a rush. Start off simple, and let the rest find itself. Having someone to talk to and feeling comfortable around them is quite beautiful, and it's good feeling.

শেষ চিঠি

তারিখঃ ২ জুন, ২০১৪ 



প্রিয়,

কিছু কথা তোমাকে বলতে চাই, কিন্তু জানি কোনদিনও বলতে পারবো না। আর তাই শেষ সমাধান আমার শেষ চিঠি। এই চিঠি যা হয়তো কোনদিনও তোমার ডাকবাক্সে পৌঁছাবে না। পড়ে থাকবে আমার পুরনো কাগজের স্তুপে, তবুও তোমার প্রশ্নের উত্তরগুলো আমার চিঠিতে লিখে গেলাম।

তুমি আমাকে ভুলে যাবে, আমি যত দ্রুত তোমাকে ভুলে যাবো, তার চেয়েও বেশি দ্রুত তুমি আমাকে ভুলে যাবে। কেন জানো? মনে করো বিয়ের প্রথম তিনদিন তুমি একধরনের ঘোরের মধ্যে থাকবে। শরীরে গয়নার ভার, মুখে মেকআপ এর প্রলেপ, চারিদিক থেকে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ, অনেক রঙের আলো আর হাজারো তোমার দর্শনার্থী। তখন তুমি চাইলেও আমার কথা মনে করতে পারবে না। 

আর আমি? আমি হয়তো তোমার বিয়ের খবর পেয়ে কোন বন্ধুর সাথে উল্টাপাল্টা কিছু খেয়ে পড়ে থাকবো। আর একটু পরপর তোমাকে অপবাদ দিবো, হৃদয়হীনা বলে মন্তব্য করবো। আবার পরক্ষনেই পুরাতন স্মৃতির কথা মনে করে বন্ধুর কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে দু ফোঁটা অশ্রু বিসর্জন দিবো, চোখ মুছে সিগারেটে একটা লম্বা টান দিবো। 

বিয়ের পরদিন থেকে তো তুমি আরও ব্যস্ত। স্বামী আর মিষ্টির প্যাকেট, এই দুই হাতে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যাবে। বাসায় কতো মেহমান, কতো আয়োজন, কোর্মা, পোলাও আরও কতো শত যন্ত্র যোগাড়।

আমাকে কিন্তু তখনও তুমি ভুলে যাবে না, ক্ষণে ক্ষণে মনে পড়বেই। এই যেমন স্বামীর হাত ধরার সময়, একসাথে রিকশায় চড়ার সময় আরও কতো কি। আর আমি তখন ছন্নছাড়া হয়ে ঘুরে বেড়াব, দেরি করে বাসায় ফিরব, বন্ধুদের বলবো "জীবনে প্রেম করিস না, প্রেম ভালবাসা সব ভুয়া জিনিষ, সব ভুং ভাং"। 

একমাসের মাথায় তুমি হানিমুনে যাবে, নতুন বাসা হবে তোমার ঠিকানা, অনেক শপিং, নিজের মতো করে সংসার সাজানো  আরও কতো কি। মাঝে মাঝে হয়তো স্বামীর সাথে হাল্কা মিষ্টি করে ঝগড়া করবে। তখন তুমি বিরাট সুখি। কখনও আমার কথা মনে হলে ভাববে, আমার সাথে বিয়ে না হয়ে বোধহয় ভালই হয়েছে। 

ততদিনে আমি মোটামুটি আবার মাথা তুলে দাঁড়াবো। হয়তো মনস্থির করবো, একটা ভালো চাকরি করতে হবে, তোমার চেয়ে সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করে তোমাকে দেখাতে হবে। সবাই জানবে তোমাকে আমি ভুলে গেছি। কিন্তু মাঝরাতে তোমার ছবিগুলো দেখবো আর দীর্ঘশ্বাসে রুম ভারী হয়ে উঠবে। 

হয়তো পরের দুই বছর তুমি কারো প্রাক্তন প্রেমিকা বা কারো নতুন বউ থাকবে না। তুমি তখন নবজাতকের মা। পুরনো প্রেমিকের স্মৃতি, স্বামীর আহ্লাদ এসবের চেয়েও বাচ্চার ডায়পার আর পোলিও  টিকা নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকবে। অর্থাৎ, আমি তোমার জীবন থেকে মোটামুটি পার্মানেন্টলি ডিলিট হয়ে যাবো। 

এদিকে হয়তো আমিও কোন ভালো চাকরি পেয়ে যাবো, মাসের শেষে মোটা অঙ্কের বেতন আর দুই ঈদে বোনাস। আমি তখন ভীষণ ব্যস্ত, সত্যিই তোমাকে ভুলে গেছি। শুধু রাস্তায় তরুণ যুগল দেখলে তোমার কথা মনে পড়বে, কিন্তু তখন আর দীর্ঘশ্বাস আসবে না। এর কয়েক বছর পর আমিও হয়তো ঘরে নতুন বউ তুলবো, সুখে শান্তিতে দিন চলবে আমারও।

হঠাৎ কোন এক মন খারাপের রাতে, তোমার স্বামী নাক ডেকে ঘুমাবে। আমার স্ত্রীও ব্যস্ত থাকবে ঘুমের রাজ্যে। শুধু তোমার আর আমার চোখে ঘুম থাকবে না, সেদিন অতীত আমাদের দুজনকে নিঃশব্দে কাঁদাবে। সৃষ্টিকর্তা ব্যাতিত যে কান্নার কথা কেউ জানবে না কোনদিন, কেউ না।

ইতি,
তোমার আমি